চলে গেলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন, জানাজা নেত্রকোনায়।

0 436

সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ মারা গেছেন। তিনি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শনিবার শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (১৯ মার্চ) এক শোকবার্তায় সাহাবুদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

আরেক শোকবার্তায় সাহাবুদ্দীন আহমদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাহাবুদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছেন সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অপু উকিল। তারা মরহুমেরর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছেন।

বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রথম জানাজা আজ শনিবার তাঁর নিজ জন্মভূমি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নের পেমই গ্রামের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হবে। সাহাবুদ্দীন আহমদের ভাতিজা সোহরাব উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এ বিষয়ে সাহাবুদ্দীন আহমদের ভাতিজা সোহরাব উদ্দিন বলেন, বিকেল তিনটার দিকে হেলিকপ্টারে সাহাবুদ্দীন আহমদের মরদেহ পেমই গ্রামে নিয়ে আসা হয়েছে। এরপর এখানে প্রথম জানাজা শেষে আবারও মরদেহ ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

সাহাবুদ্দিন আহমদ ১৯৩০ সালে নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার প্রেমই গ্ৰামে জন্মগ্ৰহণ করেন তিনি। পিতা তালুকদার রেসাত খ্যাতনামা সমাজ সেবক ছিলেন। সাবেক প্রেসিডেন্টের ছেলে মেয়েদের মধ্যে বড় মেয়ে অধ্যাপক ড. সিতারা পারভিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ২০০৫ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫১ সালে অর্থনীতিতে বিএ (অনার্স) এবং ১৯৫২ সালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন সাহাবুদ্দিন আহমদ। ছিলেন ফজলুল হক হলের ছাত্র।

১৯৫৪ সালে তদানিন্তন পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের (সিএসপি) প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে জনপ্রশাসনে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন।

বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের কর্মজীবনের সূচনা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে। পরবর্তী সময়ে সহকারী জেলা প্রশাসক হওয়ার পর ১৯৬০ সালে প্রশাসন থেকে বিচার বিভাগে বদলি হন। আসীন হন বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ পদে। ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর ৬ই ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন।

১৯৯১ সালে তার অধীনে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। পরে শর্তানুযায়ী তাকে প্রধান বিচারপতির পদে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২৩শে জুলাই তাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি করা হয়। তখন তিনি অবসর কাটাচ্ছিলেন। ২০০১ সালের ১৪ই নভেম্বর পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে অবসরে যান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.