সোশ্যাল মিডিয়ায় সন্ত্রাসীদের মিথ্যা বানোয়াট প্রকাশিত তথ্যের প্রতিবাদ

0 16

মো. গোলামুর রহমান।।

 

গত ২৫ জুন ২০২৫ তারিখ “লংগদুতে বিজিবি কর্তৃক জুম্ম গ্রামবাসীকে হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন” শিরোনামে একটি বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা সংবাদ আকারে প্রকাশিত হয়েছে পাহাড়ে বসবাসরত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর Hill Voice নামে একটি ওয়েবসাইটে, যা সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যমূলক এবং প্রকৃত ঘটনার সম্পূর্ণ বিপরীত। এই ধরনের মিথ্যা তথ্য প্রচারের মাধ্যমে সন্ত্রাসীরা শুধু জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে না, বরং একটি রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিজিবিকে হেয় প্রতিপন্ন করার ঘৃণ্য অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ তথা রাজনগর ব্যাটালিয়ন (৩৭ বিজিবি) সর্বদা সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের আলোকে পার্বত্য এলাকার শান্তি, সম্প্রীতি ও নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে বিজিবি কখনও সাদা পোশাকে টহল পরিচালনা করে না, বরং সবসময় ইউনিফর্ম পরিধান করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে দায়িত্ব পালন করে। স্থানীয় সব সম্প্রদায়ের জনগণের সঙ্গে বিজিবির সম্পর্ক দীর্ঘদিনের সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং সহানুভূতিশীল। তারা স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় করে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করে, যা এলাকার নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য অপরিহার্য। ২৫ জুন ২০২৫ তারিখে রাঙামাটি সেক্টর কমান্ডারের সভাপতিত্বে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে স্থানীয় হেডম্যান, কারবারী, চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সভায় পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত সব সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়। এটি প্রমাণ করে যে, বিজিবি কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্য বা হয়রানির মনোভাব পোষণ করে না বরং সকলে মিলেই শান্তিপূর্ণ বসবাসে উৎসাহ দেয়। উল্লেখ্য যে, উক্ত বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনে যে তিনজন নিরীহ দোকানদারকে কেন্দ্র করে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও মনগড়া। এই ধরনের ভুয়া তথ্যের মাধ্যমে নিরাপত্তা বাহিনী ও সাধারণ জনগণের মাঝে অবিশ্বাস ও ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করার অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি শুধু নিরীহ দোকানদারদের সামাজিক সম্মান ক্ষুণ্ন করে না, বরং দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা বাহিনীকে জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপকৌশল। বিজিবি দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখা, জরুরি চিকিৎসা সহায়তা প্রদান, শিক্ষা খাতে অবদান রাখা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আসছে। তারা পাহাড়ি-বাঙালি নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের পাশে থেকে মানবিক সহায়তা প্রদান করে থাকে। বিশেষত দুর্গম এলাকায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও শিক্ষা সামগ্রী প্রদান এবং সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকা বিজিবির নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। তারা কখনোই সাধারণ জনগণকে ভয়ভীতি প্রদর্শন কিংবা হয়রানির কাজে জড়িত থাকে না। বিজিবি সবসময় পেশাদারিত্ব বজায় রেখে ইউনিফর্মে দায়িত্ব পালন করে এবং তাদের ওপর আনা ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই মিথ্যা অভিযোগ একটি নির্ভরযোগ্য সংস্থার ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস ছাড়া কিছু নয়। আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিচ্ছি যে, বিজিবি সবসময় সাধারণ জনগণের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে। পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে বিজিবির অবদান অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। এ ধরনের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন শুধুমাত্র জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে না, বরং জাতীয় নিরাপত্তা ও সংহতির জন্যও হুমকিস্বরূপ। তাই আমরা এই প্রতিবেদনটির তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমকে ভবিষ্যতে আরও দায়িত্বশীলতা, বস্তুনিষ্ঠতা এবং পেশাদারিত্ব বজায় রেখে সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে আহ্বান জানাই, যেন তারা এ ধরনের বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য বিশ্বাস না করে এবং সত্য যাচাই করে মতামত গঠন করে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.